ঢাকা | বঙ্গাব্দ | আজকের ভিজিটর: 5,059,024

কালোধারা বাতিলের দাবিতে ফুঁসছেন কর্মচারীরা

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : May 24, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
ad728

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ-২০২৫ এ বিশেষ বিধান সংযোজনের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সংশোধিত অধ্যাদেশ থেকে কালাকানুন বা কালোধারাগুলো বাতিলের দাবিতে রোববার সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কর্মচারীরা। কর্মচারীদের সব সংগঠনের নেতাকর্মীরা এক হয়ে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।

 

তারা বলেন, কালাকানুন যুক্ত করে প্রণীত অধ্যাদেশ কেউ মানবে না। ১৯৭৯ সালের সরকারি চাকরির বিশেষ বিধান ইতোমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করেছেন। এই বাতিল বিধান পুনরুজ্জীবিত করার মানে নতুনভাবে বিতর্ক তৈরি করা। বর্তমান সরকার সেই কাজটিই করেছে। এর ফলে কর্মচারীদের অধিকার খর্ব হবে, তারা কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়বে। কাজেই এই অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে। অন্যথায়  যে কোনো মূল্যে এটা প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে তারা আইন মন্ত্রণালয়ের সব রুমে তালা দেবেন বলে ঘোষণা করেন।

 

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ ২০২৫-এ সংযোজন করা কালাকানুন বা ধারাগুলো বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান কর্মচারীরা। রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় তারা সচিবালয়ের বাদামতলায় সমবেত হওয়ার কর্মসূচি দিয়েছেন।

 

রোববার সচিবালয়ে, বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের উদ্যোগে মৌন মিছিল ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সংগঠনের সভাপতি মো. বাদিউল কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মৌন মিছিল-পূর্ব সমাবেশে সংগঠনের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম বক্তৃতা করেন। কর্মচারীরা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে সচিবালয়ের অভ্যন্তরে প্রতিটি লেন প্রদক্ষিণ করেন এবং কালাকানুন বাতিলের দাবিতে স্লোগান দেন। এর আগে সচিবালয়ের ভেতরে এত বড় সমাবেশ ও মিছিল আর কেউ কখনো দেখেনি বলে জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

 

কর্মসূচির একপর্যায়ে কর্মচারী নেতারা আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে জানতে পারেন তিনি অফিসে আসেননি। এরপর তারা আইন সচিবের সঙ্গে দেখা করে অনুমোদিত অধ্যাদেশে তাদের আপত্তির বিষয়গুলো তুলে ধরেন। এ সময় আইন সচিব তাদের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং তাদের যৌক্তিক দাবি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দেন।

এরপর নেতারা সাক্ষাত্ করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমানের সঙ্গে।

 

সেখানে তারা দীর্ঘ সময় ধরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সিনিয়র সচিব তাদের বক্তব্য শোনার পর বলেন, কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ছাড়া কোনো ধরনের অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হবে না। সিনিয়র সচিবের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে নিবর্তনমূলক অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

 

মৌন মিছিল-পূর্ব সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি বাদিউল কবির বলেন, সরকার দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বাতিল হওয়া ১৯৭৯ সালে সরকারি চাকরি (বিশেষ বিধান) সরকারি চাকরি আইনে সংযোজন করেছে। এটা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ভেটিং সাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিশেষ বিধান বাস্তবায়ন হলে নাগরিক হিসাবে কর্মচারীরা তাদের মৌলিক অধিকার হারাবে। নারী কর্মচারীরা হারাবে সম্ভ্রম। প্রতিবাদ করলেই বিশেষ বিধানের আলোকে চাকরিচ্যুত করা হবে। কর্মকর্তাদের বেপরোয়া দুর্নীতির সব রাস্তা প্রশস্ত হবে। কর্মচারীরা কর্মকর্তাদের সেবাদাসে পরিণত হবে।

 

কো-চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম বলেন, এটি একটি কালো আইন যার মাধ্যমে কর্মচারীর টুঁটি চেপে ধরা হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোনো সরকার এ ধরনের কালো আইন প্রণয়ন করেনি।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর আমলারা প্রধান উপদেষ্টাকে ভুল বুঝিয়ে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এই কালাকানুন প্রণয়ন করেছে। এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।

এদিকে রোববার প্রশাসনে অবস্থানরত আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অপসারণের প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। সকাল ১০টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 


নিউজটি আপডেট করেছেন : Prothom Bulletin

কমেন্ট বক্স